এবিএনএ : ভারত সফরে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এর মধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে ভারতের দিল্লি। নয়াদিল্লিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে এক পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন। হিংসার আগুনে এখনো জ্বলছে দিল্লি। মৌজপুর, ব্রহ্মপুরী, ভজনপুরা চক, গোকুলপুরী-সহ বিভিন্ন এলাকায় চলছে দফায় দফায় সংঘর্ষ।
ভারতের সংবাদ মাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া ও এই সময় জানিয়েছে, দিল্লিতে হিংসার ঘটনায় মৃত বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০০। যদিও সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে দিল্লি পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। আহতদের মধ্যে ৫৬ জন পুলিশকর্মী। বিভিন্ন এলাকায় ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হচ্ছে। মৌজপুরে আক্রান্ত হয়েছেন সাংবাদিকরা। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন একটি নিউ চ্যানেলের সাংবাদিক। আহত হয়েছেন আরও এক সাংবাদিক।গোকুলপুরীর বাজারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুড়ে গিয়েছে বহু দোকান।
মঙ্গলবার দুপুরে দু পক্ষের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ভজনপুরা চক। জ্বালিয়ে দেওয়া হল বহু দোকান। ভজনপুরা, চাঁদবাগ ও কারাওয়ালনগরের রাস্তায় লাঠি ও রড হাতে দাপিয়ে বে়ড়াল বহু মানুষ। নাগরিকত্ব আইনের সমর্থক ও বিরুদ্ধের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এক সংবাদ চ্যানেলের দু জন সাংবাদিক আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মৌজপুরে একাধিক গাড়ি ও দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি কভার করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এক সাংবাদিক। গোকুলপুরীতে পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেখানকার বাজারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।
রবি ও সোমবারের পর মঙ্গলবার সকাল থেকেই ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিল্লির ব্রহ্মপুরী এলাকা। সেখানে দুপক্ষের মধ্যে পাথরবৃষ্টি শুরু হয়েছে। মুখ ঢেকে পাথর ছুড়তে দেখা যায় কয়েকজনকে। আগুন লাগানো হয় ২টি গাড়িতে। অশান্তির আশঙ্কায় বন্ধ ৫টি মেট্রো স্টেশন। জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবারপুর, গোকুলপুরি, শিব বিহার ও জোহরি এনক্লেভ মেট্রো স্টেশনের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কোনও ট্রেন দাঁড়াবে না। ওই এলাকায় ১৪৪ ধারাও জারি হয়েছে। দিল্লির আরও ১০ জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব দিল্লির সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবরপুর তো বটেই, তার সঙ্গে আরও তিনটি মেট্রো স্টেশন বন্ধ করে ওই লাইনে মেট্রো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। দিল্লির উত্তেজক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১২ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠকের ডাকেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঙ্গলবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বাইজাল, মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজাল বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী ও আমি দু জনেই চাই দিল্লিতে শান্তি ফিরে আসুক। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় যা করার তাই করা উচিত।’